1. live@www.dainikajkernayabangla.com : দৈনিক আজকের নয়া বাংলা : দৈনিক আজকের নয়া বাংলা
  2. info@www.dainikajkernayabangla.com : দৈনিক আজকের নয়া বাংলা :
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
” সবার জন্য মানবাধিকার, সবার জন্য মর্যাদা ” ৭৮ তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস সাঁথিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ধুনটে নবাগত ওসির সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও গণঅধিকার পরিষদের সাক্ষাৎ দিঘলিয়ার নবাগত অফিসার ইনচার্জের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানবাধিকার দিবস -২০২৫ উপলক্ষ্যে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত…… সীমান্তে ৫৩ বিজিবির পৃথক পৃথক অভিযানে ভারতীয় মদ, শাড়ী, চাদর ও ২টি গরু জব্দ “মানবতার শিক্ষায় শিক্ষিত প্রজন্ম মানবাধিকার রক্ষার ভিত্তি “ ‘ইত্যাদি’র নতুন পর্বের শুটিং চুয়াডাঙ্গায়, প্রচার ২৬ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ কলেজে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান -২০২৫

গাড়ল পালন করে সফল খামারি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ বায়েজিদ জোয়ার্দার
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

 

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিশাল জায়গাজুড়ে এর অবস্থান। ছুটির পর বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে আসে শিক্ষার্থীসহ এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণ। মাঠের পাশেই আরেকটু ফাঁকা জায়গা। সেখানে প্রায় বিকেলে চরতে দেখা যায় একপাল গাড়ল। প্রাণীগুলো ঘুরে বেড়ায়, ঘাস খায়। আবার সন্ধ্যার আগে রাখালের ইশারায় খামারে ফেরে। গাড়লগুলোর মালিক লিখন মণ্ডল, এলাকায় যিনি হেবুল নামে পরিচিত। প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি বিশাল গাড়ল খামার গড়ে তুলেছেন। ১২টি দিয়ে শুরু করে এখন তাঁর খামারে গাড়ল পাঁচ শতাধিক।

ছিলেন চা দোকানি
২০০৪ সালের কথা। দামুড়হুদার নাটুদা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের হেবুলের বয়স তখন ৩০। অভাবের কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে পারেননি। সংসার চালাতে নাটুদা ইউনিয়নের ঐতিহাসিক আটকবর মোড়ে কাঠের টং দোকান দিয়ে চা বিক্রি শুরু করেন হেবুল। সামান্য আয়ে কোনো রকমে সংসার চলছিল। কিন্তু অভাব যায় না। এক পর্যায়ে তাঁর মাথায় আসে, এভাবে হবে না। সচ্ছলতা আনতে অন্য কিছু করতে হবে। সেই কিছু একটা করার ভাবনা থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখলেন হেবুল। জমাতে থাকলেন টাকা।

হেবুল বলেন, অল্প অল্প করে জমানো এবং ধারদেনা করে মোট দুই লাখ টাকা জোগাড় করি। ২০০৪ সালে বাড়ির পাশে ছোট পরিসরে গাড়ল রাখার ঘর বানাই। এরপর বাকি টাকা নিয়ে চলে যাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষ্ণনগর এলাকায়। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে সেখান থেকে দুই জাতের (হাইক্রস ও অরিজিনাল) ১২টি গাড়ল কিনে শুরু করি খামার। এখন খামারে দুই জাতের ৫৫০টি গাড়ল রয়েছে, যেগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা। প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার গাড়ল বিক্রি করি। তিন রাখালের বেতনসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে বছরে গড়ে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা। গাড়ল খামারের আয় থেকে জমি কিনেছি, বাড়ি করেছি, মোটরসাইকেল কিনেছি, মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমান আলী বলেন, হেবুল একসময় অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা।

বাড়ছে উদ্যোক্তা
কঠোর পরিশ্রম করে অভাবের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন এক সময়ের চা দোকানি হেবুল। তাঁর বয়স এখন ৫২। চুলে পাক ধরেছে। তাঁর কাছ থেকে গাড়লের বাচ্চা কিনে এবং তাঁর দেখাদেখি গাড়ল পালনে উদ্যোগী হয়েছেন উপজেলার প্রায় ২০ জন। তিনি তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। বর্তমানে বাড়ির পাশের সাড়ে চার বিঘা জমির ওপর হেবুলের গাড়লের খামার। গাড়ল ছাড়াও বিভিন্ন শেডে ১২০টি ছাগল, ১৫০টি হাঁস-মুরগিসহ কবুতর পালন করছেন তিনি।

হেবুল জানান, গাড়ল খুবই শান্ত স্বভাবের প্রাণী। এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ালে কোনো ঝুঁকি থাকে না। তবে শীত মৌসুমে একটু ঝুঁকি আছে। এ সময় বাসস্থান নিরাপদ রাখতে হয়। তাহলে আর কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া নিয়মিত কৃমির ডোজসহ বিভিন্ন টিকার মাধ্যমে গাড়লকে সুস্থ রাখা যায়।

বেশি গাড়ল দামুড়হুদায়
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলায় ৪২ হাজার ৭২১টি গাড়ল পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পালন হচ্ছে দামুড়হুদা উপজেলায়; ২১ হাজার ৩৯৭টি। এ ছাড়া খামার ও ব্যক্তি পর্যায়ে সদর উপজেলায় ১১ হাজার ৫২৯টি, আলমডাঙ্গায় সাত হাজার ৮০০টি ও জীবননগর উপজেলায় এক হাজার ৯৮৫টি গাড়ল পালন করা হচ্ছে। এটি পালন লাভজনক হওয়ায় শিক্ষিত বেকার ও দরিদ্ররা এ পেশায় ঝুঁকছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নানা পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে খামারিদের।

চাহিদা রয়েছে এ প্রাণীর
গাড়ল ও ভেড়া দেখতে প্রায় একই রকম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেবুল বলেন, গাড়ল মূলত ভেড়ার জাত। এর দেহ সুঠাম, আকারে বড়, কান ও লেজ লম্বা হয়। আর ভেড়ার কান, লেজ ছোট এবং ওজন কম। গাড়ল বছরে দুবার সর্বোচ্চ তিনটি বাচ্চা দেয়। প্রথমবার এক বছর বয়সে বাচ্চা দেয়। একটি পরিপূর্ণ গাড়লের ওজন হয় ৬০ থেকে ৮০ কেজি, যা ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দেড় ও দুই মাস বয়সী বাচ্চা ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। চার-পাঁচ মাস বয়সী বাচ্চার দাম ১০ হাজার টাকা।

কোথায় বিক্রি করেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, খামারি, উদ্যোক্তারা বাচ্চা গাড়ল কেনেন। আর বড় গাড়ল ও মাংস নেয় বিভাগীয় ও রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলো। বর্তমানে আমার খামারে আনুমানিক ৪০ লাখ টাকার গাড়ল রয়েছে। প্রতিটি গাড়লের পেছনে দৈনিক ১৫-২০ টাকা খরচ হয়।
দামুড়হুদার আরেক গাড়ল খামারি চারুলিয়া গ্রামের নাসিরুল ইসলাম। তাঁর রয়েছে ২৩০টি গাড়ল। তিনি বলেন, একটু বুঝে পালন করলে অল্প সময়েই লাভবান হওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা গাড়ল পালনের জন্য উপযোগী। এ প্রাণীর খাবার নিয়ে তেমন সমস্যা হয় না। সবুজ ঘাস, খড়কুটো, ভুট্টা খাওয়ালে গাড়ল বেশি বাড়ে। গাড়লের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও বেশি। ঈদের সময় ব্যাপক চাহিদা এর।

খাবার ও পরিচর্যা
খামারের রাখাল আরমান বলেন, সকালে গাড়লের ঘর পরিষ্কার করে দানাদার ও সবুজ ঘাস খাওয়ানো হয়। দুপুরের পর পাল নিয়ে আশপাশের চারণভূমি, ধান কাটার পর ফাঁকা মাঠ এবং খামার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়ের মাঠে চরাতে যাই। সন্ধ্যা নামার আগেই আবার গাড়লের পাল নিয়ে ফিরতে হয়। খামারে ফিরে গাড়লগুলোকে পানি খাওয়ানোর পর বাসস্থানে রেখে আমাদের ওই দিনের মতো ছুটি। শীত মৌসুমে বাসস্থান ঢেকে রাখি। বাচ্চাগুলোকেও গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিই।

হেবুলের বিষয়ে তিনি বলেন, হেবুল ভাই মাস শেষ হলেই আমাদের পারিশ্রমিক দিয়ে দেন। গত ১০ বছর ধরে তাঁর খামারে কাজ করছি। বিপদ-আপদে তিনি আমাদের সহযোগিতা করেন।

খোঁজ রাখে প্রাণিসম্পদ বিভাগ
প্রাণিসম্পদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে হেবুলের। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত খামার পরিদর্শনসহ সার্বিক খোঁজ রাখেন।

দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, গাড়ল একটি সম্ভাবনাময় খাত। জেলায় গাড়ল পালনে সফল ও বড় উদ্যোক্তা হেবুল মণ্ডল। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত তাঁর খামারের গাড়লের পিপিআর ভ্যাক্সিন ও কৃমিনাশক দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক আ হ ম শামীমুজ্জামান

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ
বায়েজিদ জোয়ার্দার

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিশাল জায়গাজুড়ে এর অবস্থান। ছুটির পর বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে আসে শিক্ষার্থীসহ এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণ। মাঠের পাশেই আরেকটু ফাঁকা জায়গা। সেখানে প্রায় বিকেলে চরতে দেখা যায় একপাল গাড়ল। প্রাণীগুলো ঘুরে বেড়ায়, ঘাস খায়। আবার সন্ধ্যার আগে রাখালের ইশারায় খামারে ফেরে। গাড়লগুলোর মালিক লিখন মণ্ডল, এলাকায় যিনি হেবুল নামে পরিচিত। প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি বিশাল গাড়ল খামার গড়ে তুলেছেন। ১২টি দিয়ে শুরু করে এখন তাঁর খামারে গাড়ল পাঁচ শতাধিক।

ছিলেন চা দোকানি
২০০৪ সালের কথা। দামুড়হুদার নাটুদা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের হেবুলের বয়স তখন ৩০। অভাবের কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি পেরোতে পারেননি। সংসার চালাতে নাটুদা ইউনিয়নের ঐতিহাসিক আটকবর মোড়ে কাঠের টং দোকান দিয়ে চা বিক্রি শুরু করেন হেবুল। সামান্য আয়ে কোনো রকমে সংসার চলছিল। কিন্তু অভাব যায় না। এক পর্যায়ে তাঁর মাথায় আসে, এভাবে হবে না। সচ্ছলতা আনতে অন্য কিছু করতে হবে। সেই কিছু একটা করার ভাবনা থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখলেন হেবুল। জমাতে থাকলেন টাকা।

হেবুল বলেন, অল্প অল্প করে জমানো এবং ধারদেনা করে মোট দুই লাখ টাকা জোগাড় করি। ২০০৪ সালে বাড়ির পাশে ছোট পরিসরে গাড়ল রাখার ঘর বানাই। এরপর বাকি টাকা নিয়ে চলে যাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষ্ণনগর এলাকায়। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে সেখান থেকে দুই জাতের (হাইক্রস ও অরিজিনাল) ১২টি গাড়ল কিনে শুরু করি খামার। এখন খামারে দুই জাতের ৫৫০টি গাড়ল রয়েছে, যেগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা। প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার গাড়ল বিক্রি করি। তিন রাখালের বেতনসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকে বছরে গড়ে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা। গাড়ল খামারের আয় থেকে জমি কিনেছি, বাড়ি করেছি, মোটরসাইকেল কিনেছি, মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমান আলী বলেন, হেবুল একসময় অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা।

বাড়ছে উদ্যোক্তা
কঠোর পরিশ্রম করে অভাবের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন এক সময়ের চা দোকানি হেবুল। তাঁর বয়স এখন ৫২। চুলে পাক ধরেছে। তাঁর কাছ থেকে গাড়লের বাচ্চা কিনে এবং তাঁর দেখাদেখি গাড়ল পালনে উদ্যোগী হয়েছেন উপজেলার প্রায় ২০ জন। তিনি তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। বর্তমানে বাড়ির পাশের সাড়ে চার বিঘা জমির ওপর হেবুলের গাড়লের খামার। গাড়ল ছাড়াও বিভিন্ন শেডে ১২০টি ছাগল, ১৫০টি হাঁস-মুরগিসহ কবুতর পালন করছেন তিনি।

হেবুল জানান, গাড়ল খুবই শান্ত স্বভাবের প্রাণী। এগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ালে কোনো ঝুঁকি থাকে না। তবে শীত মৌসুমে একটু ঝুঁকি আছে। এ সময় বাসস্থান নিরাপদ রাখতে হয়। তাহলে আর কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া নিয়মিত কৃমির ডোজসহ বিভিন্ন টিকার মাধ্যমে গাড়লকে সুস্থ রাখা যায়।

বেশি গাড়ল দামুড়হুদায়
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলায় ৪২ হাজার ৭২১টি গাড়ল পালন করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পালন হচ্ছে দামুড়হুদা উপজেলায়; ২১ হাজার ৩৯৭টি। এ ছাড়া খামার ও ব্যক্তি পর্যায়ে সদর উপজেলায় ১১ হাজার ৫২৯টি, আলমডাঙ্গায় সাত হাজার ৮০০টি ও জীবননগর উপজেলায় এক হাজার ৯৮৫টি গাড়ল পালন করা হচ্ছে। এটি পালন লাভজনক হওয়ায় শিক্ষিত বেকার ও দরিদ্ররা এ পেশায় ঝুঁকছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নানা পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে খামারিদের।

চাহিদা রয়েছে এ প্রাণীর
গাড়ল ও ভেড়া দেখতে প্রায় একই রকম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেবুল বলেন, গাড়ল মূলত ভেড়ার জাত। এর দেহ সুঠাম, আকারে বড়, কান ও লেজ লম্বা হয়। আর ভেড়ার কান, লেজ ছোট এবং ওজন কম। গাড়ল বছরে দুবার সর্বোচ্চ তিনটি বাচ্চা দেয়। প্রথমবার এক বছর বয়সে বাচ্চা দেয়। একটি পরিপূর্ণ গাড়লের ওজন হয় ৬০ থেকে ৮০ কেজি, যা ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দেড় ও দুই মাস বয়সী বাচ্চা ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। চার-পাঁচ মাস বয়সী বাচ্চার দাম ১০ হাজার টাকা।

কোথায় বিক্রি করেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, খামারি, উদ্যোক্তারা বাচ্চা গাড়ল কেনেন। আর বড় গাড়ল ও মাংস নেয় বিভাগীয় ও রাজধানীর রেস্তোরাঁগুলো। বর্তমানে আমার খামারে আনুমানিক ৪০ লাখ টাকার গাড়ল রয়েছে। প্রতিটি গাড়লের পেছনে দৈনিক ১৫-২০ টাকা খরচ হয়।
দামুড়হুদার আরেক গাড়ল খামারি চারুলিয়া গ্রামের নাসিরুল ইসলাম। তাঁর রয়েছে ২৩০টি গাড়ল। তিনি বলেন, একটু বুঝে পালন করলে অল্প সময়েই লাভবান হওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গা জেলা গাড়ল পালনের জন্য উপযোগী। এ প্রাণীর খাবার নিয়ে তেমন সমস্যা হয় না। সবুজ ঘাস, খড়কুটো, ভুট্টা খাওয়ালে গাড়ল বেশি বাড়ে। গাড়লের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও বেশি। ঈদের সময় ব্যাপক চাহিদা এর।

খাবার ও পরিচর্যা
খামারের রাখাল আরমান বলেন, সকালে গাড়লের ঘর পরিষ্কার করে দানাদার ও সবুজ ঘাস খাওয়ানো হয়। দুপুরের পর পাল নিয়ে আশপাশের চারণভূমি, ধান কাটার পর ফাঁকা মাঠ এবং খামার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়ের মাঠে চরাতে যাই। সন্ধ্যা নামার আগেই আবার গাড়লের পাল নিয়ে ফিরতে হয়। খামারে ফিরে গাড়লগুলোকে পানি খাওয়ানোর পর বাসস্থানে রেখে আমাদের ওই দিনের মতো ছুটি। শীত মৌসুমে বাসস্থান ঢেকে রাখি। বাচ্চাগুলোকেও গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে দিই।

হেবুলের বিষয়ে তিনি বলেন, হেবুল ভাই মাস শেষ হলেই আমাদের পারিশ্রমিক দিয়ে দেন। গত ১০ বছর ধরে তাঁর খামারে কাজ করছি। বিপদ-আপদে তিনি আমাদের সহযোগিতা করেন।

খোঁজ রাখে প্রাণিসম্পদ বিভাগ
প্রাণিসম্পদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে হেবুলের। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত খামার পরিদর্শনসহ সার্বিক খোঁজ রাখেন।

দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, গাড়ল একটি সম্ভাবনাময় খাত। জেলায় গাড়ল পালনে সফল ও বড় উদ্যোক্তা হেবুল মণ্ডল। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত তাঁর খামারের গাড়লের পিপিআর ভ্যাক্সিন ও কৃমিনাশক দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক আ হ ম শামীমুজ্জামান

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ধুনটে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু—খুঁটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে প্রস্তুতির সূচনা আশেকে এলাহী শিবলী ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি টঙ্গীর বৈশ্বিক ইজতেমার পর দেশের অন্যতম বৃহৎ দ্বিতীয় বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিত ধুনট পূর্ব ভরণশাহী ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম খুঁটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে। শুরায়ে নেজামের তত্ত্বাবধানে আহলে হক্ব ওলামায়ে কেরামদের নির্দেশনায় পরিচালিত এ ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতের প্রথম ধাপে আজ রবিবার (০৭ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ৯টায় উদ্বোধনী দোয়া ও নসীহতের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ওলামায়ে কেরাম, তাবলীগ জামাতের সাথী, সাধারণ মুসল্লি ও স্থানীয় মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে মাঠ প্রস্তুতের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। প্রধান অতিথি তাবলীগ জামাতের প্রবীণ মুরুব্বি হযরত মাওলানা রেজাউল করিম সাহেব (কাজিপুর) ইজতেমার তাৎপর্য ও আখেরাতমুখী জীবনের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন— “ইজতেমার মাঠের জন্য যারা সহায়তা করছেন, শ্রম ও সময় দান করছেন—এই সব amal আখেরাতে অফুরন্ত সওয়াবের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।” অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মুফতি খোরশেদ আলম, মুফতি শাহাদাৎ হোসাইন, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাসুম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল খালেক, মাওলানা মাসুদুর রহমান সুমন, মুফতি এনামুল হক আরেফী, মুফতি আতিকুর রহমান, হাফেজ রেজাউল করিম, মাওলানা রবিউল ইসলাম রবি প্রমুখ। স্থানীয় মুরুব্বিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— আখতার আলম সেলিম, মাহবুব হোসেন চঞ্চল, দুলাল হোসেন মল্লিক, আলামিন হোসেন, শামিম খান, আঃ মান্নান খান—এ ছাড়া তাবলীগ জামাতের অসংখ্য যুবক-বৃদ্ধ সাথী ভাই এবং এলাকার সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেন। ইজতেমা কর্তৃপক্ষ আগামী দিনগুলোতে মাঠ প্রস্তুতসহ সকল কার্যক্রমে এলাকার মুসল্লি, যুব সমাজ, ওলামায়ে কেরাম এবং তাবলীগ জামাতের সাথীদের আন্তরিক উপস্থিতি ও সক্রিয় সহযোগিতার জন্য দাওয়াত ও আহ্বান জানিয়েছেন। শেষে হযরত মাওলানা রেজাউল করিম সাহেবের বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে উদ্বোধনী দিনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। মাঠ প্রস্তুতির এ সূচনা এলাকাবাসীর মাঝে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে

রাস্তার খুলে দেওয়ার দাবিতে পশ্চিম সেওতা মানববন্ধন। দৈনিক নয়া বাংলা মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি। মানিকগঞ্জ পৌরসভাধীন ১ নং ওয়ার্ড পশ্চিম সেওতা রাস্তার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি সহ শতাধিক নারী মানুষ। ৭ই ডিসেম্বর ২০২৫ ইং রবিবার সকাল ১১ টায় মানিকগঞ্জ পৌরসভারধীন ১ নং ওয়ার্ড পশ্চিম সেওতা রাস্তার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকার সাধারণ জনগণ। মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত থেকে রাস্তার দাবীতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। পশ্চিম সেওতার শত শত লোকের অভিযোগ আক্তার হোসেন এবং হাশেম গং পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয় আক্তার হোসেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে দাপট খাটিয়ে এলাকাবাসীর যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে সাধারণ মানুষের রাস্তা ‌প্রতিবন্ধীকতার সৃষ্টি করে। মানববন্ধনে এলাকাবাসীর অভিযোগ নূরে মদিনা মসজিদ মাদ্রাসা কমপ্লেক্সে মুসল্লিরা এবং ছেলেমেয়েরা যেন মসজিদে যাইতে না পারে সেই জন্য পূর্বপরিকল্পিত ভাবে যাতায়াতের রাস্তা আক্তার গং এবং হাশেম ১০০ বছরের যাতায়াতের পুরাতন রাস্তা বন্ধ করে দেয়। মানববন্ধনকারীদের আরো অভিযোগ এলাকাবাসীদের উপস্থিতিতে সার্ভেয়ারের মধ্যস্থতায় যাতায়াতের রাস্তা দেওয়ার জন্য রাজি থাকা সত্ত্বেও আক্তার ও হাশেম যাতায়াতের রাস্তা পরবর্তীতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে ডাক্তার হারুন মুন্সি বলেন সাবেক কাউন্সিলরা এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ গণ উপস্থিত থেকে রাস্তা সমস্যা সমাধান করে দিলেও পরবর্তীতে আক্তার ও হাশেম রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে অবশেষে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর রাস্তা দেওয়ার আবেদন পেশ করেন। এলাকাবাসীর আশা প্রশাসনের উদ্বোধন কর্তৃপক্ষ জনগণের সুবিধার্থে যাতায়াতের রাস্তা দেওয়ার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট